মাহমুদুস সোবহান খান রচিত পাপেটমাস্টারস একটি উপন্যাস যা জনরা বা ধরণ হিসেবে একটি স্পাই-থ্রিলার। এই পাপেটমাস্টারস নামক উপন্যাসটি লেখক মাহমুদুস সোবহান খানের একটি এসপিওনাজ সিরিজের। উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে, অমর একুশে গ্রন্থমেলায়।
আমাদের বাংলাতে খুব প্রচলিত একটি কথা রয়েছে, ভোরের সূর্য দেখে নাকি বলে দেয়া যায় পুরো দিনটি কেমন যাবে; যেটিকে ইংরেজির লোকেরা বলেন, মর্নিং শোজ দ্য ডে। এই কথাটির আসলে কত শতাংশ বা কতটুকু সত্য সেটি আমার জানা নেই। তবে এই পাপেটমাস্টারস উপন্যাসটির প্রস্তাবনার অংশটুকু পড়েইই বুঝতে পেরেছিলাম এটি আমার জন্য উপযুক্ত এবং কিছুটা হলেও বুঝতে পারব। এবং শেষ পর্যন্ত পড়ার পরে আসলেই প্রমাণ হলো যা ভেবেছিলাম তা-হয়েছে, এটি আমার কাছে ‘মর্নিং শোজ দ্য ডে’র মতোই মনে হল। খুব সহজ-সরল-প্রাঞ্জল বাংলায় কথক হিসেবে লেখকের সাবলীল বক্তব্যে ও চরিত্রগুলোর চমকপ্রদ সংলাপে উপন্যাসটির এগিয়ে চলা ভালোই লেগেছে আমার কাছে। লেখনীতে ছিলনা বর্ণনার অহেতুক মেদ।
![]() |
পাপেটমাস্টারস বইয়ের প্রচ্ছদ |
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত ২০২২ সালকে কল্পনা করে লেখা এই পুরো বইয়ে মনে হয়েছে আমি সিনেমা দেখছিলাম। পড়ছিলাম সাদা কাগজে কালো রঙের শব্দ কিন্তু সামনে ভাসছিলো রুপালি পর্দায় দুর্দান্ত এক সিনেমা। আমরা ইউরোপিয় ইউনিয়ন সম্পর্কে জানি, তাঁরা কী করে থাকে, ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি দেশের কেমন সম্পর্ক, এতে কি সব সুযোগ সুবিধা রয়েছে সেসব নিয়ে আমরা কম বেশি জানি। এরকমই একটি ইউনিয়ন গড়ার কথা উঠেছিলো এশিয়াতে এবং স্বাভাবিকভাবেই এর নাম প্রস্তাব করা হয়েছে এশিয়া ইউনিয়ন। কিন্তু এটি করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি একমাত্র বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ইকরাম শাহাদাতের অনিচ্ছার কারণে। কিন্তু ছোট্ট এই বাংলাদেশ যখন অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পুর্ণতার দ্বারপ্রান্তে তখন প্রধানমন্ত্রী কেন এই ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠায় মত না দিয়ে বরং ভেটো দিলেন? এখান থেকেই গল্পের শুরু তবে আমাদের লেখক নিয়ে গেছেন ২৫০ বছর পেছনে।
নীল রিশাদ। ৬ ফুটেরও বেশি উচতার মানুষটিও সদ্য ৩০ বছর পেরিয়েছে। পদে লেফটেন্যান্ট কর্নেল। খুবই দক্ষ একজন স্পাই। মূল কথায় যাওয়ার আগে একটু বলে নিতে হয় যে, উপন্যাসে নীল রিশাদ চরিত্রটির আগমন বেশ সিনেম্যাটিক বা ফিল্মিক করে দেখিয়েছেন লেখক। পুরো গল্পেই তাকে ভয়-ডরহীন একজন চৌকশ এজেন্ট বলেই দেখেছি যাকে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) এর প্রধান বিশেষ এক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ফেরারি করে রেখেছে এবং মানুষের কাছে তিনি একজন দেশদ্রোহী বলে চিহ্নিত হয়ে আছে। এখানের আরো একটি ইতিবাচক চরিত্র হলো মেজর ফারিহা তাহনাম। খুবই দক্ষ এবং কঠিনসব অভিযানে আস্থা রাখারা মতো একজন কর্মকর্তা। পূর্বে ছিলো চীফের পিএ। স্বভাবে খুব কাঠখোট্টা হলে ভেতরে জমাট বাঁধা এক ধরণের মায়া রয়েছে যা থাকে অপ্রকাশ্য তবে সবসময় যে তা অপ্রকাশ্য থাকে সেটি নয়; যেমনটি দেখা যায় একদম শেষে, ফারিহা নীলকে জানায় তাকে সে খুব অনুভব করে তবে উত্তরের অপেক্ষা না করেই প্রস্থান করে নিজের গতিতে।
রাজধানীতে একের পর এক বিভিন্ন দেশের কূটনীতিককে হত্যা করা হচ্ছে কিন্তু সেই হত্যাকাণ্ডগুলো এমনভাবে হচ্ছে যেন একে মনে করা হয় স্বাভাবিক মৃত্যু, অর্থাৎ কোনো রকম প্রমান না রেখেই খুনি এই খুনগুলো করত লুনাটিক কিলার পরিচয়ে একজন। কিন্তু কেন? এই খুন রহস্য, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এশিয়া ইউনিয়ন গঠনে কেন অনীহা এবং তাঁর কি এমন বিপদ তার রহস্য বের করার জন্য অবশ্যই বইটির শেষাংশ পর্যন্ত একজন পাঠককে পড়তে হবে এবং তা মনোযোগ সহকারে। তবে বইটি একবার পড়া শুরু করলে তা থেকে মনোযোগ সরে যাওয়ার কোনো কারণ খুঁজে পাইনি।
পাপেটমাস্টারস নামের এই স্পাই কাম মিস্ট্রি থ্রিলারটিতে পাপেটমাস্টারদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য লেখক কখনও টাইটানিক জাহাজ ডোবা না ডোবার রহস্য তুলে এনেছেন, এনেছেন আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমের অদ্ভুদ রহস্য, আমাদের বুঝিয়েছেন যুদ্ধ রহস্য, নিয়ে এসেছেন ইলুমিনাতির টোটকা, ফরাসি বিপ্লব, দেখিয়েছেন ১৩ এর আধিপত্য, যুক্তিতে দেখিয়েছেন আমেরিকার টুইনটাওয়ার ধ্বংস নাটক। নেপোলিয়ান বোনাপার্টের ১৮১২ সালে রাশিয়ায় হেরে যাওয়ার পর আবার ১৯১৩ সালে লিপজিগে হেরে যাওয়ায় পালিয়ে বেরানো এবং বছর দুইয়ের মাথায় অদৃশ্য কোনো শক্তির হাত ধরে নেপোলিয়ানের শক্তি ফিরে পাওয়া নিয়ে মগজ ঘোরানো কিছু কথাবার্তা পাওয়া যায় এখানে। এছাড়া এডলফ হিটলারকেও ছুঁয়ে যাওয়া হয়েছে বইটিতে।
একটি চরিত্রের কথা না বললেই নয়। চরিত্রের নাম হলো জেনি উইন্টার। তাকে প্রথমে একজন একাডেমিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ান বলে দেখানে হলে সব হিসাব বদলে যায় থ্রিলারের থ্রিলিং ব্যাপারগুলোর একদমই শেষে এবং একে নাটকের নাটকয়তা বলেই মনে করি। এই সুন্দরী মেয়েটি নীল রিশাদের সাথে ঘুরেছে, থেকেছে, খেয়েছে এবং চুটিয়ে প্রেম করেছে। আর এসব হয়েছে ভারতে মাটিতে। তাঁদের দুজনের বেশ কিছু অংশে রোম্যান্স দেখানো হয়েছে যা নিঃসন্দেহে ভালো ছিলো তবে যারা একটু বেশি রক্ষণশীল তাঁদের জন্য এর মাত্রা ঠিক গ্রহনযোগ্য নয়। তাই বলে এ রোম্যান্সকে এই খোলামেলার যুগেও অশ্লীলতা ছোঁয়নি যা জেনির একটি মন্তবের দ্বারা বোঝা যায়। সংলাপটি হলো- ‘এহেন অচল পুরুষ তো জীবনেও দেখিনি, মেয়েদের পটিয়ে পটিয়ে নির্জন ঘরে নিয়ে শেষে গল্প শোনে!’
পাপেটমাস্টারদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য যেমন আমাদের সামনে বিভিন্ন ঘটনা, যুক্তি ও যুক্তির খেলা খেলেছেন লেখক, তেমনি গল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটু পরপরই জন্ম দিয়েছেন বিভিন্ন রকম টুইস্টের। ইতিবাচক, নেতিবাচক ও নিরপক্ষে চরিত্রগুলোর নিজেদের লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও বিষয়ের ওপর নজরদারি করা বা আড়ি পাতা, আড়ি পাতার জন্য কৌশলগত খেলা, তথ্য চুরির খেলা, বায়োমট্রিকের খেলা, বিভিন্ন প্রযুক্তির ফিকশনাল ব্যবহার ও অপব্যবহার, স্পাইয়ের পেছনে স্পাই লাগানো, ইউরেনিয়াম চুরি নাটক, নয়া দিল্লিকে মিথ্যে ঝুঁকিতে ফেলার নাটক ইত্যাদি এখানে একেকটি মোড়ে মোড়ে সাসপেন্স এনে দিয়েছে। এই উপন্যাসে ধোঁকা দেয়ার বেশ কিছু লেয়ার দেখা যায়। কে কত লেয়ারে কাকে কাকে ধোঁকায় ফেলতে পারে তেমনই একটি প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা গেছে। সেই ধোঁকা দেয়ার লেয়ার নিয়ে যদি কিছুটাও বলতে যাই তাহলে অনেকটাই স্পয়লার দেয়া হয়ে যাবে যা অনুচিৎ, এমনিতেই পর্যালোচনা করতে গেলে অবশ্য গল্পের কিছু কিছু বলে দিতে হয়।
পুরো গল্প আমার কাছে ভালোই লেগেছে এবং আমার মনে হয়েছে এমনসব রহস্যবাঁধা গল্প ও উপন্যাস আমার আরও পড়া উচিৎ। কিছু কিছু জায়গায় সংলাপগুলো মুদ্রণের আগে একটু রিফ্রেইজ করে নিতে পারলে ভালো হতো, লেখক হয়ত নিজেও এটি উপলব্ধি করতে পেরেছেন যদি তিনি বইটি বই হয়ে ছাপা হওয়ার পর পড়ে থাকেন। পুরো উপন্যাসে আমাকে যে শব্দ দুটি খুব ভুগিয়েছে তা হলো- ‘তারমানে’ এবং ‘নড’। এগুলো এত ব্যবহার আমার কাছে অতি ব্যবহার মনে হয়েছে। শব্দ দুটির মধ্যে ‘তারমানে’ই আমাকে বেশি ভুগিয়েছে। এতবার এই শব্দকে ব্যবহার না করে এর কাছাকাছি শব্দ বা প্রয়োজনে নতুন বাক্যের ব্যবহার করতে পারতেন মাহমুদুস সোবহান খান। পাশাপাশি লেখক বেশ কিছু জায়গায় বেশ কিছু অভিব্যক্তির দুই রকম অর্থ বোঝানোর জন্য বিরামচিহ্নের যথাক্রমে প্রশ্নবোধক চিহ্ন (?) এবং বিস্ময়সূচক চিহ্ন (!) ব্যবহার করেছেন যা আমার কাছে অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছে, এ নিয়ে ব্যাকরণের কী ব্যাখ্যা আছে তা আরও পরের বিষয়। অসাবধানতাবসত দুই-চার জায়গায় বানানের ত্রুটি দেখা গেছে তবে সেটি উপন্যাসের সৌন্দর্য ঢেকে দিতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। আমার বেশি ভালো লাগতো যদি বাংলা একাডেমির বানানরীতি সম্পূর্ণভাবে প্রয়োগ করা হতো। নীল রিশাদের সাথে সাথে উপন্যাসের সিসি ক্যামেরাগুলো আমাকেও হাপিয়ে তুলেছিলো।
গল্পে বাংলাদেশের লেফটেন্যান্ট কর্নেল নীল রিশাদকে সাউথ আফ্রিকার একজন সাংবাদিক হিসাবে ভারতে সার্ক সম্মেলনে অংশ নিতে দেখা যায়, তখন তাঁর নাম হয়ে যায় নীল রবার্টসন। এখন সে যেহেতু একজন সাউথ আফ্রিকার নাগরিক সেহেতু তাকে ভারতে ইংরেজিতেই কথা বলতে হয়েছে। কিন্তু আমি যতটুকু জানি তাতে এই ভারতিয় উপমহাদেশের মানুষের ইংরেজি বলার ধরণ কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পারবেন অন্যসব দেশের মানুষ যাদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন কাজ থাকে। সুতরাং শুরুর দিকে নীলের সাউথ আফ্রিকার নাগরিক কিনা সে ব্যাপারে অপরদেশি চরিত্রগুলোর কাছে একটু কানফ্লিক্ট দেখানোর দরকার ছিলো, যেহেতু এটি একটি থ্রিলার। নীল যখন নিজেকে সাউথ আফ্রিকার বলে দাবি করে তখন তাঁর ভিত্তি হিসাবে লেখককে কিছু বাক্য ব্যয় করতে দেখিনি। তবে জেনি উইন্টারের খোলস নিয়ে এবং তাঁর অসঙ্গতি ঠিকই লেখক বলে গেছেন। তাহলে নীল রিশাদের নীল রবার্টসন হয়ে যাওয়ার পর যে অসঙ্গতি লোকের কাছে ধরা পরবে সেটি নিয়ে লেখকের কিছু বলার দরকার ছিলো না? নাকি লেখক এটি সচেতনভাবে এড়িয়ে গেছেন?
আরেকটি বিষয় হলো, এটি যেহেতু একটি আন্তর্জাতিক প্লট ও প্রেক্ষাপট নিয়ে লেখা উপন্যাস সেহেতু এখানে ভিনদেশি সব চরিত্রগুলোর কথা বলার ভাষা হবে ইংরেজি বিশেষ পরিস্থিতি সৃষ্টি ছাড়া। তবে এটি যেহেতু বাংলা ভাষার একটি বই সেহেতু লেখক ওই সংলাপগুলোই আমাদের জন্য বা সাহিত্যের জন্যই বাংলাতেই দেখিয়েছেন। কিন্তু এখানে বাংলার পাশাপাশি আবার কিছু কিছু জায়গায় ইংরেজিও ব্যবহার করেছেন যা দরকার ছিলো না কারণ ওসব বাক্যালাপ ইংরেজিতে হচ্ছে এটি পাঠক বুঝতে পারে এবং লেখককে এখানে এক ধরণের অনুবাদকই বলা যায়। এটি ফিকশান হতে পারে কিন্তু যুক্তির বাইরে গিয়েতো কিছু করার সুযোগ নেই, আর যুক্তির বাইরে গিয়ে কিছু দেখাতে গেলে বা মিথ্যে কিছুকে সত্য বলতে গেলে তারও একটি উপযুক্ত ব্যাখ্যা থাকা জরুরি।
উপন্যাসটিতে প্রচুর চরিত্র এনেছেন এবং এমন কোনো চরিত্র আমি পাইনি যেটির নাম দেয়া হয়নি কিন্তু আমার মনে হয় কোনো চরিত্র গুরুত্বপূর্ণ না হলে পাঠকের কাছে তাঁর নাম-পরিচয় না দেয়াই ভালো। এতে অন্যদিকে মনোযোগ ছুটে যাবার সম্ভাবনা থাকে। প্রধান প্রধান চরিত্রের মধ্যে রয়েছে নীল রিশাদ, জেনি উইন্টার, ফারিহা তাহনাম, মীর্জা আন্দালিব খান, ক্রিটাল ডান, নোরা ইরানি এবং মহেন্দ্র ভেজাগ। এরা কেউ ইতিবাচক চরিত্রে কেউ নেতিবাচক চরিত্রে; কেউ সিকিউরিটি স্পাই, কেউ স্পাইয়ের ওপর স্পাই, কেউ আবার পাপেটমাস্টারদের পাতি শরিক। এছাড়া তিনটি বিশেষ চরিত্র আমার চোখে পরেছে, এগুলো হলো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ইকরাম শাহাদাত, ডিজিএফআই প্রধান সায়েম চৌধুরী এবং আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট জোনাথন রস।
শুরুতে যেমন বলেছি এই বইটি আমার কাছে সিনেমার মতোই লেগেছে। শেষের দিকেও ওই একই কথা বলছি। উপন্যাসের শেষ অংশটুকু এমনভাবে এসেছে যেন এটি সচারচর তৈরি হওয়া একশন থ্রিলার সিনেমায় ‘দ্য এন্ড’ লেখাটি আসার পূর্ব পাঁচ মিনিট। শেষের দিকে আরেকটু নজর দেয়া জরুরি ছিলো। জানিনা লেখকের কোনো তাড়াহুড়ো ছিলো কিনা। তবে একদমই যে মন্দ লেগেছে তা নয়। যেহেতু উপন্যাসটি একটু বড়োসড়ো সেহেতু শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যেতে যেতে কাহিনী কিছু কিছু ভুলে যাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু শেষভাগটি এমন ভাবে লেখা হয়েছে যেন বেশ কয়েকটা লাইন পড়লেই পুরো উপন্যাসটি পাঠকের মগজে চলে আসবে এবং সে এতক্ষণ চষে আসা উপন্যাসটি উপভোগের চূড়ান্ত পুর্ণতা পাবে।
পুরো পৃথিবী নাট্যমঞ্চ বানিয়ে রাখা পাপেটমাস্টারদের সম্পর্কে কিছুটা হলেও জানতে পারা যাবে এই পাপেটমাস্টারস উপন্যাসে। আসলে একটি উপন্যাসতো শুধু একটি উপন্যাস নয় বরং তার থেকেও অনেক বেশি। এখানে একটু মূল জায়গা থাকে যার ওপর ভর করে পুরো গল সাজানো হয়, কিছু ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ থাকে, কিছু যুক্তির বিচার থাকে এবং লেখক যখন তার মূল বার্তাটি সম্পূর্ণ ভাবে হাতের মুঠোয় আনতে পারেন ঠিক তখনই বিভিন্ন চরিত্রের মাধ্যমে তা পাঠকের উদ্দেশে ফুটিয়ে তোলেন। আমার যা মনে হয়েছে তরুণ এই বাস্তববাদি বিজ্ঞানভিত্তিক থ্রিলারপ্রেমী মাহমুদুস সোবহান খান এসবের প্রত্যেকটিই খুব সুন্দরভাবে সাজাতে পেরেছেন নিজে মতো করে।
রবিবার
মার্চ ২২, ২০২০
mizanur.r.mizan@gmail.com